দুপুরে শাহবাগ মোড় অবরোধের পর সেখান থেকে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ সন্ধ্যা সাতটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে (টিএসসি) থেকে মশাল মিছিল বের করেন বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা। মিছিলটি শামসুন নাহার হল ও রোকেয়া হল প্রাঙ্গণ ঘুরে শাহবাগের দিকে যায়। সেখানে পুলিশের রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে আগে থেকেই ব্যারিকেড দিয়ে অবস্থান করছিল একদল পুলিশ।
মিছিলটি শাহবাগের জাতীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে পৌঁছালে ব্যারিকেডের পেছনে থাকা পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাক্বিতণ্ডা হয়৷ এর একপর্যায়ে বাম সংগঠনের একজন নেতা হাতে থাকা মশাল পুলিশের ওপর ছুড়ে মারেন। এরপর পুলিশ লাঠি ও মশালের বাঁশ হাতে তাঁদের ধাওয়া দেয়। এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে বাম সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে লাঠি দিয়ে বেদম পেটায় পুলিশ। বাম সংগঠনের কয়েকজন নারী সদস্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করে পুলিশ।
ধাওয়া খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের ফটকের ভেতর ঢুকে পড়েন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ ফটকের সামনে অবস্থান করছিল। সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার এই পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়েন। মসজিদের ফটকের ভেতরে সামনের সারিতে অবস্থান করা বাম সংগঠনগুলোর নেতারা পুলিশকে চলে যেতে বলছিলেন। কিন্তু এর মধ্যেও পেছন থেকে পুলিশের ওপর ঢিল ছোড়া হচ্ছিল। ফটকের দুই পাশে কিছুক্ষণ দুই পক্ষের মধ্যে এই উত্তপ্ত অবস্থা চলে।
বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা একপর্যায়ে মুহুর্মুহু ঢিল নিক্ষেপ শুরু করলে পুলিশ পিছু হটে। তখন বাম সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা ফটকের ভেতর থেকে বেরিয়ে আবার রাস্তায় অবস্থান নেন। এ সময় চারুকলা অনুষদের সামনে অবস্থানে থাকা পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের একটি শেল নিক্ষেপ করে। কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ার ফাঁকে পুলিশ শাহবাগ থানার ভেতরে চলে যায়। পুরো ঘটনার সময় শাহবাগ থেকে টিএসসি অভিমুখী এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
মিছিলে অংশ নেওয়া সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, তাঁদের ১০-১২ জন নেতা-কর্মী পুলিশের হামলায় আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া কর্মসূচি থেকে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আন্দোলনকারীদের হামলায় ১০-১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের তিন-চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সাজ্জাদুর রহমান দাবি করেন, তিনি নিজেও হামলায় আহত হয়েছেন।
জাগো প্রহরী/এফআর
0 মন্তব্যসমূহ