মিডিয়া তাগুতের বড় হাতিয়ার,আমাদের সচেতনতা খুব জরুরি



মাওলানা সাইফুল ইসলাম ফরিদপুরী।।

রাসূলে কারিম সা. এর গোয়েন্দা প্রধান হযরত হুযায়ফা রা. বলেন আমি তোমাদের ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি যে জিনিসের ভয় করছি তা হচ্ছে যে, তোমাদের জানা থাকা সত্ত্বেও তোমরা ঐ বস্তুকে প্রাধান্য দিবে যা তোমরা প্রত্যক্ষ করবে এবং তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে এমতাবস্থায় যে তোমরা টেরও পাবে না। (ইবনে আবি শায়বা)

বর্তমানে মিডিয়া গুলো ইসলাম পন্থীদের কে এভাবে পেশ করে যে, মনে করা হচ্ছে- সন্দেহ করা হচ্ছে- ধারনা করা হচ্ছে- কথা গুলো বলে তারা ইসলাম পন্থীদের উপর থুতু নিক্ষেপ করতে চায় এবং ওরা সহজেই নিক্ষেপ করে দিচ্ছে। আর যারা সংবাদ দেখে এগুলো শুনছে, তাদের মনও চাচ্ছে যে, সংবাদটিকে অপরের কাছেও প্রচার করা হোক।

তাই সে সহকর্মীদের কাছে এবং লোকদের মাঝে এগুলো বলে বেড়াতে থাকে অথচ উচিৎ ছিলো সংবাদ গুলো নিয়ে যাচাই বাচাই করা। কিন্তু তা না করে ঐ ইসলাম বিদ্বেষী সংস্থার সংবাদ মাধ্যমগুলো থেকে যাই শুনে,সত্য হোক বা মিথ্যা হোক সেটাকে সত্য বলে মেনে নেয় আর সারাদিন মুখের খোরাক বানিয়ে প্রচার করতে থাকে।

পাঠক এগুলো কেন হচ্ছে জানেন আপনার সামনে বাস্তবতা তুলে ধরছি ১৮৯৭ সালে সুইজারল্যান্ডে তিনশত ইহুদী হির্টযেলের নেতৃত্ব একত্রিত হয়ে সারা বিশ্বের উপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে একমত হয়। সিদ্ধান্তটি উনিশটি প্রোটোকলের সমন্বয়ে পৃথিবীবাসীর সামনে আত্মপ্রকাশ করে। ওখানে যে সকল স্থান এবং বস্তুর উপর করায়ত্ত প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে জোর দেয়া হয়,মিডিয়ার মাধ্যমে সেগুলি নিম্নোক্ত ধাচে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়।

আমরা মিডিয়ার ঘাড়ে আরোহণ করে তার লাগামকে সর্বদা আমাদের শাসনে রাখব।আমাদের শত্রুদের আয়ত্তে এমন কোন শক্তি বা সংবাদকে থাকতে দিব না; যার মাধ্যমে তারা সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি শত্রুদেরকে আমরা এমন কোন অবস্থানে ছেড়ে দিব না যে, আমাদের নিরীক্ষা ব্যতীতই তারা কোন তথ্য লোকদের কাছে পৌঁছাতে পারবে।

আমরা এমন সংবিধান সৃষ্টি করব যে, কোন প্রকাশক বা প্রেসকর্তাদের জন্য আমাদের সম্যক অনুমতি ব্যতীত কোন তথ্য ছাপাতে অপারগ হয়ে যায়।আমাদের অধীনে এমন সব সংবাদ থাকবে, যার মাধ্যমে আমরা শত্রুদের থেকে সর্বদায় নিরাপদ স্থানে অবস্থান করব। চাই শত্রুদের এ দলগুলি গনতান্ত্রিক পার্টি হোক কিংবা কোন সংগ্রামী দল হোক।

এমনকি আমরা এমন সব সংবাদের বাহক হব, যার মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর সব দেশের সকল স্তরের লোকদের আক্রমণের শিকার হব না।আমরা এমন সব সংবাদ মানুষের সামনে পেশ করব,যার মাধ্যমে জাতিগত, গোত্রীয় এবং সকল স্তরের সর্বসাধারণ তা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে।

আমরা এমন সব বৈজ্ঞানিক, এডিটর এবং প্রসিদ্ধ ব্যক্তিদেরকে আয়াত্তে রাখব, যারা মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য এগিয়ে থাকবে এবং তারা ভয়ানক সব অপরাধের রেকর্ডধারী হবে।সংবাদ মাধ্যমগুলোকে আমরা এজেন্সিদের দ্বারা কন্ট্রোলে রাখব। যারফলে পৃথিবীবাসী আমরা যে রঙ দেখাতে চাইব, তাই পৃথিবীবাসী দেখবে।

ইহুদীরা যে সকল প্ল্যান ওখানে করেছিল,তার সবগুলোই বাস্তবায়ন করে ছেড়েছে। পৃথিবীর কোন তথ্য বা ছোট্ট কোন সংবাদও ইহুদীদের অনুমিত ব্যতীত মিডিয়ায় প্রকাশ বা সংবাদের অংশ হতে পারে না।বিশ্বময় সংবাদমাধ্যম, ইমেইল, টিভি চ্যানেল তাদেরই প্রতিপালিত এজেন্সিদের থেকে সংবাদ গ্রহণ করে থাকে।

পৃথিবীর বিখ্যাত সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স, এপি এবং এএফপি হচ্ছে ইহুদীদের মালিকানায়। এদের মধ্যে প্রসিদ্ধ হচ্ছে রয়টার্স। মূল প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে ‘ জোলিস রয়টার্স ‘। ১৮১৬ সালে সে জার্মানির এক ইহুদী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। আজ সারাবিশ্বের শিক্ষিত শ্রেণীর লোকেরা পর্যন্ত সেই ইহুদী কর্তৃক রয়টার্সের সংবাদ কে ওহীতুল্য মনে করে থাকে।মিডিয়ার মাধ্যমে যেভাবে তথ্য প্রচার করা হয়, সারাবিশ্বের মানুষ বিনাদ্বিধায় তাই গ্রহণ করে নেয়।

আশ্চর্যের বিষয় হলো সকল সংবাদই শিক্ষিত মুসলমানগণ ঐ সংবাদগুলোকেই সত্য বলে মনে করে এবং ওটাই তাদের মতামত হয়ে যায়। বিবিসির মত সংবাদ সংস্থাও রয়টার্স থেকেই সংবাদ গ্রহণ করে থাকে। ইহুদী পরিচালিত সংবাদ সংস্থাগুলোই মুসলমানদেরকে ঈমান এবং নিশ্বাসের স্তর থেকে বের করে সন্দেহ ও দোদুল্যতার অভ্যাস বানিয়েছে।

ইসলাম এবং আলেম উলামাদের ব্যাপারে মনের ভিতরে সন্দেহের স্থান দেওয়া ঐ সংবাদ সংস্থা গুলোর বিশেষ এক তুহফা, যা শ্রবণকারীদের কাছে প্রতিনিয়ত সরবরাহ করে থাকে।

লেখক: যুগ্ম সম্পাদক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ফরিদপুর জেলা শাখা।

জাগো প্রহরী/এফ আর

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ