ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে পটুয়াখালীর ৪৭ গ্রাম প্লাবিত


জাগো প্রহরী : ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে পটুয়াখালীর নদীর পানির উচ্চতা বেড়েছে ৩ থেকে ৪ ফুট। এর ফলে জেলার পাঁচ উপজেলার প্রায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হয়েছে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে।

সরেজমিনে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর মাঝখানে জেগে ওঠা চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে দিয়ে দেখা গেছে, দুর্ভোগের নানা চিত্র। চারদিকে পানিতে থৈথৈ করছে পুরো চন্দ্রদ্বীপ। ওই ইউনিয়নের উত্তর সীমানায় উত্তর রায়সাহেব গুচ্ছগ্রাম। দুপুর ১টায় দেখা গেল প্রায় অর্ধশত মানুষ পানিবন্দি। খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান এনামুল হক আলকাস মোল্লা ছুটে এলেন দুইটি ট্রলার নিয়ে। তিনি ট্রলার বোঝাই করে ওই গুচ্ছগ্রামের সব মানুষদের নিয়ে রায়সাহেব সাইকোস শেল্টারে তুলে দেন।
এ ছাড়াও ওই ইউনিয়নের চরনিমদি, চর রায়সাহেবের দক্ষিন এলাকা, চর ব্যারেট, চর ওয়াডেল, চর দিয়ারা কচুয়া পানিবন্দি হয়ে পড়ায় ওইসব এলাকার মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

চেয়ারম্যান আলকাস বলেন, চন্দ্রদ্বীপের সব গ্রামে মাইকিং করা হয়েছে। সবাইকে এবং তাদের গবাদিপশুকে নিরাপদে রাখার জন্য। পানিবন্দি লোকজনকে সরিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে তুলে দেয়া হচ্ছে। তবে পাঁচ ফুটের অধিক নদীর পানিবেড়েগেলে পুরো চন্দ্রদ্বীপ ডুবে যাবে। আমি ও আমার সহকর্মীরা এবং ভলান্টিয়ার সবাই মিলে মানুষের জানমাল রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি।’

শুধু চন্দ্রদ্বীপই না, আম্পানের প্রভাবে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ওই উপজেলার, পাকডাল, রঘুনাদি, চরআমরখালী, চর বাসুদেবপাশা, উত্তর মঠবাড়িয়া, পূর্ব মমিনপুর, চর ফেডারেশন এলাকার প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষ পানিবন্দি। দশমিনা উপজেলার চর হাদি, চর বোরহান, বাশবাড়িয়া, পাতারচর, চর শাহাজালাল, আমবাড়িয়া, চর ডনডনিয়া এলাকা প্লাবিত হয়ে প্রায় ১৬ হাজার মানুষ পানি বন্দি। গলাচিপা উপজেলার গ্রামর্দ্দন, গোলখালী এবং কালিশুরী গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাসফাকুর রহমান জানান, মধ্য চালিতাবুনিয়া, বিবির হাওলা, চরলতা, গোলবুনিয়া, চর আন্ডা, খালগোড়া, গোঙ্গীপাড়া, চর কাশেম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ৭৪০ টি বাড়ি ঘর প্লাবিত হয়েছে। বিচ্ছিন্ন চরের মানুষদের সাইকোন শেল্টারে নিয়ে আসা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রের মানুষের খাওয়ার জন্য শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া যারা রোজা আছেন তাদের ইফতারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. রবিউল ইসলাম জানান, কলাপাড়ার লালুয়া ইউনিয়নের ৪টি ওয়ার্ডের ১৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানি বন্দি। পানি বন্দি মানুষদের সাইকোন শেল্টারে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, একদিকে করোনা অন্যদিকে আম্ফান। তাই সরকারি নির্দেশনা মেনে প্রত্যেককে সুশৃঙ্খলভাবে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানের অনুরোধ করছি।

জাগো প্রহরী/গালিব

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ